শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন
ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটে সবচেয়ে বেশি মানুষ যাতায়াত করলেও পর্যাপ্ত লঞ্চ ট্রিপে না থাকায় যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। শীতকালীন ও বড় দিনের ছুটি কাটিয়ে এবং শুক্র ও শনিবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কোনো শেষ নেই। যাত্রী চাপ থাকায় নৌ-পথের একাধিক বিলাসবহুল সহ অব্যবস্থাপনায় থাকা লঞ্চগুলোর টিকেট কালোবাজারে ৫ গুন বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল নদী বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন শুক্রবার বরিশাল থেকে ৮টি নৌ-যান যাত্রী পরিবহন করলেও শনিবার ৬টি নৌযানের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিন সার্ভিসে থাকা বিলাসবহুল কীর্তনখোলা-১০ রিজার্ভে এবং পারাবত-১২ যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে ছিলো না। শনিবার বিলাসবহুল সুন্দরবন-১১ ও মানামী ছাড়াও অ্যাডভেঞ্চার-১, সুরভী-৮ ও পারাবত-১০ লঞ্চের কাউন্টারে কোনো টিকেট পাওয়া যায়নি। তবে বরিশাল নদী বন্দরে গিয়ে নির্দিষ্ট দালালদের কাছ থেকে এসব লঞ্চের টিকেট ৫ গুন দামে কিনতে পেরেও ভাগ্যবান মনে করছেন অনেক যাত্রী।
কালোবাজার থেকে টিকেট ক্রয় করা যাত্রীরা জানান, ২২ থেকে ২৬ ডিসেম্বর শীতকালীন ও বড় দিনের ছুটির সাথে সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ২৭ ডিসেম্বর কর্মস্থলে ফিরতে হবে। তাই বাধ্য হয়েই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বরিশাল নদী বন্দরে কালোবাজারীদের কাছে ধর্না দিয়ে ৫ গুন দামে টিকেট পেয়ে খুশী তারা। অনেকেই শুক্রবার ও শনিবারের টিকেট সংগ্রহ করেছেন কালোবাজার থেকে। কেননা পরিবার-পরিজন নিয়ে নৌ-পথেই ফিরতে হবে তাদের। তীব্র শীতের মধ্যে লঞ্চের ডেকে নারী ও শিশুদের নিয়ে যাতায়াত সম্ভব নয় তাই বাড়তি দামে বাধ্য হয়ে টিকেট সংগ্রহ করছেন লঞ্চের কেবিনের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিসেম্বর মাস জুড়েই বিভিন্ন সরকারী ছুটির পাশাপাশি বছর শেষে সন্তানদের পরীক্ষা শেষে অনেকেই ছুটি কাটাতে বাড়িতে আসে। তাই ডিসেম্বর জুড়েই টিকেটের ব্যাপক চাহিদা ছিলো। এ সুযোগটি পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে ঢাকা-বরিশাল রুটের বেশি যাতায়াতকারী নৌ-পথে ও আকাশ পথে যাত্রী জিম্মি করা হয়। জিম্মিদশা অব্যাহত থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পরেছে ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলগামী ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত শুক্র ও শনিবারের ভর্তি পরীক্ষার যাত্রীরা।
ঢাকা-বরিশাল নৌ-পথে ২১টি নৌ-যানের রুট পারমিট থাকলেও লঞ্চ মালিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭ থেকে ৮টি লঞ্চ প্রতিদিন উভয় প্রান্ত থেকে যাতায়াত করে থাকলেও স্বাভাবিক সময়েই টিকেট সংকট থাকে। অথচ যাত্রী চাপ থাকা সত্বেও শনিবার বিআইডব্লিউটিএ’র হিসেব অনুযায়ী লঞ্চ রয়েছে মাত্র ৫টি।
বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল নদী বন্দরের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার মুঠো ফোনে জানান, যাত্রী চাপ বিবেচনায় এবং শনিবার একটি লঞ্চ রিজার্ভে ও অপরটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় বাড়তি লঞ্চের তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো লঞ্চ রিজার্ভে থাকলে তার অনুকুলে একটি লঞ্চ সার্ভিসে রাখার বিধি-বিধান রয়েছে। এ বিষয়ে লঞ্চ মালিকদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি নয়।
সুত্র: হ্যালোবরিশাল